শনিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১২

:: দুঃসহ যন্ত্রণায় হিন্দু মেয়েটি ::

দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি | তারিখ: ০৮-১১-২০১২

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের এক কিশোরী (১৫) ধর্ষণের শিকার হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। বর্তমানে সে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দিয়ে বিপদে পড়েছে ওই কিশোরীর পরিবার। আসামি প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বাদীপক্ষকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। পুলিশও আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না।
ওই কিশোরীর পরিবার ও

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দিরাইয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই কিশোরী গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের শিকার হয়। প্রতিবেশী কয়েকজন নারীর সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন একই উপজেলার উজান ধল গ্রামের ফরিদ মিয়া (২১)। ফরিদের আত্মীয়স্বজন প্রভাবশালী হওয়ায় ধর্ষণের ঘটনা এত দিন চাপা ছিল। গ্রামবাসীর সহায়তায় কিশোরীর দিনমজুর বাবা গত ২১ সেপ্টেম্বর ফরিদসহ কয়েকজনকে আসামি করে দিরাই থানায় মামলা করেন।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর কাকা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মামলা করে আমরা বিপদে পড়েছি। দিরাই থানার দারোগা (এসআই) আমার কাছে প্রথমে দুই হাজার টাকা চান। এরপর চার হাজার টাকা দিতে বলেন। আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা কোথায় পাব? তখন দারোগা সাব আমাকে ধমক দেন এবং মারতে এগিয়ে আসেন। মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, আসামিরা আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দিরাই থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) মকবুলুর রহমান টাকা চাওয়ার কথা স্বীকার করলেও ধমক এবং মারতে উদ্যত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি টাকা চেয়েছি ধর্ষণের শিকার কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় খরচ হওয়া টাকা তুলতে। এ টাকা কি আমি পকেট থেকে দেব?’ বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে বলেও জানান এসআই।
মানবাধিকার-বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি রাকেশ রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এত বড় ঘটনার পরও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে—এটা দুঃখজনক। আমরা মেয়েটি ও তার পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন