শনিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১২

এক ধর্ম, এক পরিবার, সনাতন পরিবার

ঋগবেদ ৫.৬০.৫
অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস
এতে সং ভ্রাতারো তাবৃধুঃ
সৌভগায়
যুবা পিতা স্বপা রুদ্র
এযাং সুদুঘা পুশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভঃ ॥

বঙ্গানুবাদ :কর্ম ও গুনভেদেকেউ ব্রাহ্মন,কেউ ক্ষত্রিয়,কেউ বৈশ্য,কেউ শুদ্র।তাদের মধ্যে কেহ বড় নয় কেহ ছোট নয় ।ইহারা ভাই ভাই ।সৌভাগ্য লাভের জন্য ইহারা প্রযত্ন করে ।ইহাদের পিতা তরুন শুভকর্ম ঈশ্বর এবং জননীরুপ প্রকৃতি ।পুরুষার্থী সন্তানকেই সুদিন প্রদান করে ।
.......................................................................
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্র -- এই চারটি বর্ণ গুণ ত্ত কর্মানুসারে আমি সৃষ্টি করেছি ( অর্থা্ত প্রত্যেকটি মানুষের বর্ণ নির্ধারিত হবে তার গুণ ত্ত কর্ম অনুসারে, তার জন্মানুসারে নয়)। ( গীতা 4/13 )
.......................................................................

কাজেই উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি সনাতন ধর্মে বর্ণপ্রথার কোন স্থান নেই্। ব্রাহ্মন, ক্ষত্রিয়,বৈশ্য, শুদ্র --- এরা সবাই সমান, এরা সবাই ভাই ভাই। এরা সবাই ভগবানের সৃষ্টি। আর জন্ম থেকেই কারো পরিচয় নির্দিষ্ট হয় না ... পরিচয় নির্দিষ্ট হবে তার অর্জিত গুণ এবং তার কর্ম অনুসারে। আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল হল, আমরা জন্মানুসারে অন্যদের পরিচয় ঠিক করে দেই / নেই। ধরুন, 'X' এর দু'টি ছেলে হল; একজন y এবং আরেকজন z । y লেখাপড়া করে একজন ব্যরিষ্টার হয়েছে আর z লেখাপড়া করতে পারেনি। তাই z সে জুতা সেলাই-এর কাজ করছে। তো আপনার কাকে কি বলবেন .... ? যে জুতা সেলাই করছে ... তাকে কি আপনারা .....'চেৌধুরী সাহেব' বলবেন ? অবশ্যই 'মুচি' বলবেন। কাজেই এটা স্পষ্ট যে, মানুষের পরিচয় নির্দিষ্ট হয় তার অর্জিত গুণাবলী এবং কর্ম দ্বারা।

কাজেই (সনাতন ধর্মাবলম্বী) যে কোন ছেলে / মেয়ে নিজ যোগ্যতা অনুসারে অপর যে কোন মেয়ে / ছেলে (সনাতন ধর্মাবলম্বী) কে বিয়ে করতে পারে। অপর ধর্মের ছেলে / মেয়েকেত্ত বিয়ে করতে পারে। তার ধর্ম ত্যাগ করতে হবে না। কারণ ভগবান বলেছেন ... " হে মানব, ঈশ্বরের মহিমাকে বৃদ্ধি কর। ভ্রান্ত আচরণশীল অনার্য্যকে (বৈদিক) জ্ঞান দাত্ত। বিশ্বের সকলকে আর্য্য (সভ্য/সনাতন ধর্মের অন্তর্ভুক্ত) কর। (ঋকবেদ 9/63/5)।

আর একটি কথা, আমাদের হিন্দুদের প্রায় সবাই ভয়ংকরভাবে আত্মকেন্দ্রীক। প্লিজ এই আত্মকেন্দ্রীকতা বাদ দিন। আপনি যদি কোন ভাল অবস্থানে থাকেন অবশ্যই আপনার ভাইদের (গরিব হিন্দুদের) সাহয্য করবেন। সাহায্য শুধু নগদ টাকা দিয়ে করলেই হয় না, ইচ্ছে থাকলে বিভিন্নভাবে সাহায্য করা যায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ইচ্ছে করলেই 4/5 টি হিন্দু ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ বহন করতে পারেন। যদি কারো এরকম সাধ্য থাকে তবে আপনি আপনার পাশের বাড়ির গরিব হিন্দু ভাই/বোনটিকে প্লিজ দয়া করে সাহায্য করবেন।

বেদে বলা আছে:

আয় করতে হাতকে শতটিতে বৃদ্ধি কর,আর দান করতে সেই শত হাতকে হাজারে রুপান্তরিত কর।

Multiply your hands to hundred and multiply the hundred hands to thousands to distribute.
(Atharvaveda 3.24.5)
[অথর্ববেদ ৩.২৪.৫]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন