শনিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১২

সরকারি এমএম কলেজে ১৯টি বিষয়ে আসন রয়েছে ৩ হাজার ২শ’ ২৫টি

বিমল রায় : শুরু হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তির কার্যক্রম। এবার যশোরের সরকারি বেসরকারি ৩০টি কলেজে ৯ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। এসব কলেজের অনুকূলে গত ৮ নভেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে। চলবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। ৭ ডিসেম্বর আবেদনকারীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
গত কয়েক বছরের মত এবারও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এবার যশোর জেলার ৩০টি কলেজে অনার্স ভর্তির সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। এসব কলেজে মোট আসন রয়েছে ৯ হাজার। যশোরের ৩০টি কলেজের মধ্যে সর্বাধিক আসন রয়েছে সরকারি এমএম কলেজে। এ কলেজের ১৯টি বিষয়ে আসন রয়েছে ৩ হাজার ২শ’ ২৫টি। তার মধ্যে বিজ্ঞানে ৬শ’ ৪০টি, মানবিকে ১ হাজার ৯শ’ ১৫টি এবং বাণিজ্য বিভাগে ৬শ’ ৭০টি। এখানে বিষয় অনুযায়ী আসন সংখ্যা হচ্ছে বাংলায় ২শ’ ১০টি, ইংরেজিতে ২শ’টি, অর্থনীতিতে ২শ’ ৩৫টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ২শ’ ৬০টি, ইতিহাসে ২শ’ ৫০টি, ভূগোলে ১শ’ ৫০টি, দর্শনে ২শ’ ১০টি, সমাজ বিজ্ঞানে ২শ’ ৬০টি, ইতিহাসে ৭০টি, ইসলামী শিক্ষায় ৭০টি, পদার্থ বিজ্ঞানে ১শ’টি, রসায়নে ১শ’টি, গণিতে ১শ’ ৮০টি, উদ্ভিদ ও প্রাণী বিজ্ঞানে ১শ’ টি করে, হিসাব বিজ্ঞানে ২শ’ ৩০টি, ব্যবস্থাপনায় ২শ’ ৮৫টি এবং মার্কেটিং ও ফিন্যান্সে ৫০টি আসন রয়েছে।
সরকারি সিটি কলেজে ৯টি বিষয়ে মোট আসন সংখ্যা ৮শ’ ৯৫টি। এর মধ্যে বাংলায় ১শ’ ৫০টি, ইংরেজিতে ৯০টি, অর্থনীতিতে ৯০টি, দর্শনে ৫০টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ২শ’টি, সমাজকর্মে ৯৫টি, হিসাব বিজ্ঞানে ১শ’ ২০টি, ব্যবস্থাপনায় ৫০টি ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানে ৫০টি আসন রয়েছে।
সরকারি মহিলা কলেজে ৯টি বিষয়ে ৯শ’ ২০জন ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পাবে। বিষয় অনুযায়ী আসন সংখ্যা বাংলায় ১শ’ ৬০টি, ইংরেজিতে ৯০টি, অর্থনীতিতে ১শ’টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১শ’ ৫টি, ইতিহাসে ১শ’ ৫টি, ভূগোলে ১শ’ ২০টি, দর্শনে ৭৫টি, ইসলামের ইতিহাসে ১শ’ ৫টি এবং ইসলামী শিক্ষায় ৬০টি।
যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ৯টি বিষয়ে ৭শ’ ৩৫টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে বাংলায় ৬০টি, অর্থনীতিতে ৯০টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১শ’ ৫টি, সমাজকর্মে ১শ’টি, ইসলামের ইতিহাস ও ইসলামী শিক্ষায় ৫০টি করে, হিসাব বিজ্ঞানে ১শ’ ২০টি, ব্যবস্থাপনায় ২শ’ ২০টি এবং গণিতে ৪০টি আসন। যশোর শহরের ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজে দুইটি বিষয়ে অনার্স চালু রয়েছে। এখানে সমাজ বিজ্ঞানে ৫০টি এবং হিসাব বিজ্ঞানে ৫০টি আসন রয়েছে। এছাড়াও রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ফিন্যান্স ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স খোলার আবেদন করা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি দিলে রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে এ তিনটি বিষয়েও শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবেন তারা।
যশোর কলেজে ২টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এখানে ইতিহাসে ৫০টি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫০টি আসন রয়েছে। উপশহর ডিগ্রি কলেজে ৫টি বিষয়ে ২শ’ ৫০জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। এখানে বিষয়ভিত্তিক আসন সংখ্যা হচ্ছে বাংলায় ৫০, সমাজবিজ্ঞানে ৫০, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫০, হিসাব বিজ্ঞানে ৫০ ও ব্যবস্থাপনায় ৫০টি।
উপশহর মহিলা কলেজে ৭টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। প্রত্যেকটির আসন সংখ্যা ৫০টি করে। বিষয়গুলো হচ্ছে বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি। আল হেরা ডিগ্রি কলেজের ৩টি বিষয়ের প্রতিটিতে ৫০জন করে মোট ১শ’ ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। বিষয় তিনটি হচ্ছে হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও সমাজ বিজ্ঞান।
যশোর সদরের কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজে একটি বিষয় অনার্স চালু আছে। এখানে বাংলায় ৫০জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। সিঙ্গিয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজেও বাংলায় ৫০জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। যশোর সদরের মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজে সমাজবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫০জন করে মোট ১শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
ঝিকরগাছা শহীদ মশিয়ূর রহমান ডিগ্রি কলেজে বাংলায় ও হিসাব বিজ্ঞানে ৫০জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজে ২টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এখানে সমাজ বিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫০জন করে ছাত্রী ভর্তি হতে পারবে।
গঙ্গানন্দপুর ডিগ্রি কলেজে এবার সমাজ বিজ্ঞানে অনার্স কোর্স চালু হয়েছে। এখানে আসন সংখ্যা ৫০টি। কেশবপুর ডিগ্রি কলেজে ৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এখানে বিষয়ভিত্তিক আসন সংখ্যা হচ্ছে ভূগোলে ৫০টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫০টি, হিসাব বিজ্ঞানে ৫০টি এবং ব্যবস্থাপনায় ৫০টি। মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজে ৩টি বিষয়ে ২শ’ ৭০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ আছে। এখানে বিষয়ভিত্তিক আসন সংখ্যা হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১শ’ ৫০টি, সমাজকর্ম ও ব্যবস্থাপনায় ৬০টি করে। মণিরামপুর মহিলা কলেজে ২টি বিষয়ে ৫০টি করে ১শ’ জন ছাত্রী ভর্তি হতে পারবে। বিষয় ২টি হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান। মণিরামপুরের মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজে ২টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। বিষয় ২টিতে ১শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। বিষয় ২টি হচ্ছে সমাজ বিজ্ঞান ও ভূগোল। নওয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে ৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এখানে বিষয়ভিত্তিক আসন সংখ্যা হচ্ছে অর্থনীতিতে ৫০, সমাজ বিজ্ঞানে ৫০, হিসাব বিজ্ঞানে ৫০ ও ব্যবস্থাপনায় ৫০টি।
বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজে ২টি বিষয়ে ১শ’ জন শিক্ষার্থী অনার্স ভর্তি হতে পারবে। এখানকার বিষয় ২টি হচ্ছে বাংলা ও হিসাব বিজ্ঞান। বাঘারপাড়া মহিলা কলেজে ৪টি বিষয়ে ২শ’ জন ছাত্রী অনার্সে ভর্তি হতে পারবে। এখানে প্রতিটি বিষয়ে ৫০টি করে আসন রয়েছে। বিষয়গুলি হচ্ছে ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা। বাঘারপাড়ার খাজুরা শহীদ সিরাজউদ্দিন হোসেন ডিগ্রি কলেজে ৪টি বিষয়ে ২শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। এখানকার বিষয়গুলি হচ্ছে, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা।
চৌগাছা ডিগ্রি কলেজে ২টি বিষয়ে অনার্স চালু আছে। এখানে প্রতিটি বিষয়ের আসন সংখ্যা ৫০টি করে। বিষয় ২টি হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস। চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজে ৩টি বিষয়ে ১শ’ ৫০জন ছাত্রী ভর্তি হতে পারবে। বিষয় ৩টি হচ্ছে সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান। চৌগাছার এবিসিডি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ৫০জন করে ১শ’ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে।
শার্শার ডাক্তার আফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজে হিসাব বিজ্ঞানে ৫০জন এবং ফজিলাতুননেছা মহিলা কলেজে সমাজ বিজ্ঞানে ৫০জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। এছাড়া নাভারণ ডিগ্রি কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স খোলার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি দিলে তারা রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে।
এদিকে গত বছর অনার্স ভর্তিতে নানা জটিলতা থাকায় অনেক কলেজে আসন শূন্য রয়েছে। অথচ অনেক শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে পারেনি। এবার বিষয়টি সহজ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন বিভিন্ন কলেজের কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি শিক্ষার্থী এবং নতুন অনার্স খোলা কলেজগুলোর স্বার্থে ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করা উচিৎ। যাতে শিক্ষার্থীরা সহজেই ভর্তি হতে পারে। এ বিষয়ে যশোর কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা জানান, আমরা আশা করছি এবার বিষয়টি সহজ করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন